ISLAM IS IS A COMPLATE CODE OF LIFE

Guest Book My Photos MY PAGE CLICK HERE About Custom 4

আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কোন মা’বুদ নাই, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তায়ালার শেষ রাসূল

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ

الحمدُ لله وسلام على عباده الذين اصطفى، وأشهدُ أن لا إله إلا الله وَحْدَه لا شريكَ له، وأشهدُ أن مُحمّدًا عبدُه وَرَسُولُه، اللهم صلِّ عَلى سيِّدنا ومَوْلانا مُحمّدٍ النبيِّ الأميِّ وَعَلى أله وَصَحْبِه وسلّم تسليما. أعوذ بالله منَ الشّيْطانِ الرَّجِيْم، بِسْمِ اللهِ الرّحْمنِ الرّحِيْم: اِنَّهٗ مَنْ یَّتَّقِ وَ یَصْبِرْ فَاِنَّ اللهَ لَا یُضِیْعُ اَجْرَ الْمُحْسِنِیْنَ. صدق الله مولانا العظيم، وصدق رسوله النبيُّ الكريم، ونحنُ على ذلك منَ الشاهدين والشاكرين، والحمدُ للهِ ربِّ العالمين. أما بعدُ: আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মেহেরবানীতে এক মাস পর আবার আমরা মাসিক দ্বীনী মাহফিলে একত্র হতে পেরেছি- আলহামদু লিল্লাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের যত শোকর আমরা আদায় করব, তত তিনি আমাদেরকে তাঁর নিআমত বাড়িয়ে দেবেন। শোকর কীভাবে আদায় করব শোকর আদায় করতে হয় দিলে দিলে, যবানে এবং আমলের মাধ্যমে। এছাড়াও নিআমতের সৎ ব্যবহারের মাধ্যমে শোকর আদায় করতে হয়। নিআমতের গলত ব্যবহার থেকে বিরত থেকে শোকর আদায় করতে হয়। সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর শোকর আদায় করা জরুরি। যবানের মাধ্যমে শোকর আদায় করার কিছু পদ্ধতি; যেমন, মুখে আলহামদু লিল্লাহ বলা। সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর শোকর আদায় করতে পারি। প্রতি নামাযের পর, প্রতিটি নেক আমলের পর আল্লাহর শোকর আদায় করতে পারি। যখনই আল্লাহর কোনো নিআমতের কথা স্মরণ হবে তখনই বলব- আলহামদু লিল্লাহ। অন্তরের শোকর হল, অন্তরে একথার বিশ্বাস রাখা যে, আল্লাহ আমাকে যত নিআমত দান করেছেন, সব আল্লাহরই মেহেরবানী। আমার কোনো প্রাপ্য ছিল না আল্লাহর কাছে। যা পেয়েছি, সবই প্রাপ্তি। আল্লাহর কাছে আমার কোনো পাওনা নাই, তিনি মেহরবানী করে আমাকে দান করেছেন। আল্লাহ যদি মেহরবানী করেন তাহলে এই নিআমত আমি ব্যবহার করতে পারব, না হয় আমি এটা থেকে কোনো উপকৃত হতে পারব না। এই নিআমত পাওয়াও আল্লাহর রহমত, এটি কাজে লাগানোও আল্লাহর রহমত। এই বিশ্বাস রাখা হল দিলের মাধ্যমে শোকর। নতুবা যবানে ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বললাম, কিন্তু মনে মনে যদি থাকে যে, এটা আমার যোগ্যতাবলে হয়েছে, এটা আমার অধিকার, তাই পেয়েছি, নাউযুবিল্লাহ, তাহলে এটা হবে অনেক বড় নাশুকরি। আচ্ছা, আল্লাহর কাছে কি কারো কোনো অধিকার হতে পারে? কেউ কি নিজের যোগ্যতাবলে আল্লাহর থেকে কিছু নিতে পারে? কাজেই অন্তরে এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, এটা আল্লাহর দান, আল্লাহর মেহরবানী। আমলের শোকর হল, আল্লাহ মেহরবানী করে আমাকে এই নিআমত দান করেছেন, আমি কীভাবে তাঁর নাফরমানী করি! এই অনুভূতি থেকে তাঁর নাফরমানী থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ দয়া করে আমাকে এত নিআমত দান করেছেন, এখন যদি আমি এই নিআমত দিয়ে তাঁরই নাফরমানী করি, তো এটা হবে তার নাশুকরি। আল্লাহর দেয়া ফরয-ওয়াজিব বিধানগুলো ছাড়ব না আর তিনি যেসব কাজকে গোনাহ সাব্যস্ত করেছেন, বেঁচে থাকতে বলেছেন, সেগুলো আমি করব না। এটা হল আমলের মাধ্যমে শোকর। সকল ফরয-ওয়াজিব বিধানগুলো যথাযথ আদায় করা এবং গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা। তিন ধরনের শোকর গেল- যবানের মাধ্যমে শোকর, দিলের শোকর এবং আমলের মাধ্যমে শোকর। চতুর্থ হল, যে নিআমত আল্লাহ দান করেছেন তার সদ্ব্যবহার। নিআমতের যদি অপব্যবহার হয় তাহলে নাশুকরি হবে। সহীহ ব্যবহার হলে শোকর আদায় হবে। আমি যদি চোখের গোনাহ করি, তবে চোখের নিআমতের নাশুকরি হবে। চিন্তা করুন, যারা চোখে দেখে না, জন্মান্ধ বা আগে ভালো ছিল, এখন কোনো কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছে, তারা কত মুসিবত ও অশান্তিতে আছে! কিন্তু আল্লাহ আমাদেরকে চোখের নিআমত দান করেছেন। এখন যদি এই নিআমতকে ভুল পথে ব্যবহার করি, গোনাহের কাজে ব্যবহার করি, নযরের হেফাজত না করি, তাহলে একদিকে গোনাহ যেমন হবে আবার চোখের নিআমতের নাশুকরিও হবে। চোখের নিআমতের শোকর হল, চোখ দিয়ে কুরআন দেখব। চোখ দিয়ে মা-বাবার চেহারার দিকে তাকাব। চোখের সাহায্যে আমি হেঁটে যাব; গোনাহের পথে, না নেকীর পথে? নেকীর পথে। মোটকথা আল্লাহর দেওয়া এই চোখ দিয়ে আমি হয় দুনিয়ার কোনো ভালো কাজ করব, নয়তো আখেরাতের কোনো নেক কাজ করব। দুনিয়ার নেক কাজ যেমন খেত-খামারে কাজ করছি, এটা দুনিয়ার নেক কাজ। বৈধ চাকরিতে আছি, দায়িত্ব আদায় করছি, দুনিয়ার নেক কাজে আছি। আল্লাহ আমাকে হাঁটার শক্তি দান করেছেন, ধরার শক্তি দান করেছেন, তার কদর করব। কত মানুষ আছে, যাদের হাত অচল অকেজো হয়ে গেছে! কখনো একসিডেন্টের কারণে শেষ হয়ে যায়। কখনো ভুল চিকিৎসার কারণেও নষ্ট হয়ে যায়। আমাকে যে আল্লাহ তাআলা হাত দান করলেন, হাতটা আমার ভালো ও সুস্থ রাখলেন, এই হাত কি গোনাহের কাজে ব্যবহার হবে, না নেকীর কাজে? এই যে আল্লাহ তাআলা আমাকে শ্রবণশক্তি দান করলেন, এর দ্বারা কি আমি গোনাহের কথা শুনব, না নেকীর কথা? কুরআন তিলাওয়াত শুনব, নাকি গান শুনব? আল্লাহ আমাকে মস্তিস্ক দান করেছেন; এর দ্বারা কি আমি ভালো বিষয় চিন্তা করব, না গোনাহের বিষয় চিন্তা করব? বাকশক্তি দান করেছেন; আমি কি ভালো বিষয় বলব, না খারাপ বলব? হাদীসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- من كان يؤمنُ بالله واليوم الآخر فليقل خيرًا أو ليصمتْ. যার আল্লাহর প্রতি ও আখেরাতের প্রতি ঈমান আছে, অর্থাৎ যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং আখেরাত কে বিশ্বাস করে, বললে সে যেন ভালো কথা বলে, আর না হয় চুপ থাকে। ছোট্ট এই যবান আল্লাহ তাআলার দান। অঙ্গটা যদিও আয়তনে অনেক ছোট, কিন্তু এর কাজ অনেক। কাজেই কথা বলতে একটু চিন্তা করা। যা-ই মুখে আসে তা-ই বলে দেয়া যাবে না। যা-ই মুখে আসে তাই যদি বলে দেয়া হয়, তাহলে মুখে গোনাহের কথা এসে যাবে। ভেজালের কথা এসে যাবে। মুখে এমন কথাও এসে যেতে পারে, যার এক কথায়ই সংসার শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা! কাজেই যবানকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বললে ভালো কথা বলব, আর না হয় চুপ থাকব। চা দোকানে বসে কে কত বেশি বলতে পারে, পুরো দুনিয়ার খবর কে কত বেশি জানে- সেই প্রতিযোগিতা। এমনভাবে মন্তব্য করতে থাকে, যেন তিনি সবকিছু জানেন এবং বোঝেন! ভুল হোক আর ঠিক হোক সেটার কোনো তোয়াক্কা নেই। আচ্ছা বলুন তো, শুধু মন্তব্য করার মধ্যে কী কোনো ফায়েদা আছে? অহেতুক গল্প, এর দ্বারা কি কেবল সময় নষ্ট হয়, নাকি আল্লাহ তাআলা যবানের যে নিআমত দিয়েছেন এর গলত ব্যবহারও হয়? অহেতুক গল্প শুরু হলে গোনাহের কথা না এসে কি পারে? একপর্যায়ে গীবত, পরনিন্দার দিকে চলে যায়। কাজেই অহেতুক কথা বলতে নেই। হাদীসে এসেছে- من حُسنِ إسلامِ المرء تركُه ما لا يعنيه. একজন মুসলিমের ইসলামের সৌন্দর্য হল, সে অহেতুক-অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৩১৭ যে কথায় কোনো লাভ নেই, ফায়েদা নেই- না দুনিয়ার ফায়েদা, না আখেরাতের ফায়েদা- এমন কথা থেকে বিরত থাকব। যে কথা বললে আমার ফায়েদা আছে- হোক দুনিয়াবী ফায়েদা বা আখেরাতের- সেটা বলব। যেমন মিস্ত্রিকে কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছি, সেখানে কথা বললে ফায়েদা আছে। আমি জমির মালিক, শ্রমিককে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার জন্য কথা বলতে হচ্ছে, এটা বলব। কারণ এতে আমার দুনিয়াবী ফায়েদা আছে। আখেরাত বিষয়ক, যেমন কোনো আলেমকে একটা মাসআলা জিজ্ঞেস করলাম, ফায়েদা আছে। অনর্থক কথা যত কম বলে পারা যায় ততই লাভ। যে কথায় কোনো ফায়েদা নেই, এমন কথা বলতে গেলে অবচেতনভাবেই গোনাহের কথা এসে যাবে, আপনি টেরও পাবেন না। এভাবে চোখের নিআমত, কানের নিআমত, যবানের নিআমত, দিলের নিআমত, মাথার নিআমত, হাত-পায়ের নিআমতসহ যত নিআমত আল্লাহ আমাকে দান করেছেন, সব নিআমতের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। অপাত্রে ব্যবহার করা যাবে না। আল্লাহ তাআলা ধন-দৌলত দান করেছেন, এখন তা গোনাহের কাজে খরচ করব, নাকি জরুরি প্রয়োজনীয় কাজে খরচ করব? আল্লাহর রাস্তায় দান করা যেমন জরুরি কাজ, সংসারে খরচ করাও জরুরি কাজ। কিন্তু গোনাহের কাজে খরচ করলে সেটা হবে জাহান্নামের কাজ। আল্লাহ যাকে যে যোগ্যতা দিয়েছেন, সেটাকে কেবল নেক কাজেই ব্যবহার করতে হবে। দুনিয়ার নেক কাজ হোক বা আখেরাতের। যাইহোক, আমরা পাঁচভাবে শোকর আদায় করতে পারি : ১. যবানের মাধ্যমে শোকর। ২. দিলের মাধ্যমে শোকর। ৩. আমলের মাধ্যমে শোকর। ৪. নিআমতের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে শোকর। ৫. নিআমতের অন্যায় ব্যবহার থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে শোকর। যদি এভাবে শোকরের যিন্দেগী গড়তে পারি, তবে আমরা সফল। কাকে বলে তাকওয়া আমি সূরা ইউসুফের ৯০ নাম্বার আয়াত তিলাওয়াত করেছি। اِنَّهٗ مَنْ یَّتَّقِ وَ یَصْبِرْ فَاِنَّ اللهَ لَا یُضِیْعُ اَجْرَ الْمُحْسِنِیْنَ. যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে এবং সবর করবে আল্লাহ তাআলা তার সওয়াব ও প্রতিদান কখনো নষ্ট করবেন না। কারণ, যার মধ্যে তাকওয়া আর সবর আছে সে ভালো মানুষ। তাই আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়াতেও প্রতিদান দেবেন আখেরাতেও প্রতিদান দেবেন। কাজেই আমাদের মধ্যে শোকরের সাথে তাকওয়া এবং সবরও থাকতে হবে । কাকে বলে তাকওয়া? আল্লাহকে ভয় করা। আল্লাহকে ভয় করার অর্থ কি ভয় করে ঘরে বসে থাকা, না কাজ করা? এত ভয় পাচ্ছে যে, এখন নড়তেই পারছে না, একে কি তাকওয়া বলে? তাকওয়ার অর্থ হল, আল্লাহর সামনে যে আমাকে হাজিরা দিতে হবে, দাঁড়াতে হবে, তখন কীভাবে তাকে মুখ দেখাব- সেটা চিন্তা করে তিনি যা ফরয করেছেন তা করা, যা হারাম করেছেন তা থেকে বেঁচে থাকা। তাকওয়া কাকে বলে, তার অনেক ব্যাখ্যা আছে। সূরা ক্ব-ফের একটি আয়াত লক্ষ করুন- وَاُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِیْنَ غَیْرَ بَعِیْدٍ، هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ، مَنْ خَشِیَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَیْبِ وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِیْبِ، ادْخُلُوْهَا بِسَلٰمٍ ذٰلِكَ یَوْمُ الْخُلُوْدِ، لَهُمْ مَّا یَشَآءُوْنَ فِیْهَا وَ لَدَیْنَا مَزِیْدٌ. وَاُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِیْنَ غَیْرَ بَعِیْدٍ. হাশরের মাঠে একপর্যায়ে জান্নাত কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে মুত্তাকীদেরকে দেখাবার জন্য। অর্থাৎ এতদিন তো কেবল জান্নাতের কথা শুনেছ, এখন দেখ! هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ. দুনিয়াতে কেবল তোমাদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হত এই বলে যে, হারাম ও গোনাহ পাপাচার ছাড়লে জান্নাত পাবে। নেক কাজ করলে জান্নাত পাবে। এখন স্বচক্ষে দেখ। لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ. জান্নাত দেখানো হবে ওই ব্যক্তিকে, যে গোনাহ থেকে বেঁচে ছিল। ভুলে কখনো গোনাহ হয়ে গেলে তওবা করত। এক গোনাহের জন্য দশ বার তওবা করত। শত বার আল্লাহর দরবারে কাঁদত। শয়তানের ওয়াসওয়াসায়, নফসের ধোঁকায় কখনো গোনাহ হয়ে গেলে বসে থাকে না। গোনাহ করতেই থাকে, এমন না; বরং ভুল হয়ে গেলে সাথে সাথেই তওবা করে। বারবার করে। একে বলে ‘আওয়াব’। مَنْ خَشِیَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَیْبِ. আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে না দেখেও ভয় করে। দয়াময় আল্লাহ কত নিআমত আমাকে দান করেছেন, তারপরও কি আমি তাঁর নাফরমানী করব? আল্লাহর রহমত ও নিআমতের কথা স্মরণ করে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে। وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِیْبِ. আল্লাহর দরবারে হাজির হয় এমন দিল নিয়ে যে দিল আল্লাহমুখী। যে দিলের মধ্যে দুনিয়াবী লোভ এবং শয়তানী ফিকির নেই। কোনো মুনাফেকী ও শিরক নেই। কোনো অন্যায় বাসনা ও পাপাচার নেই। আল্লাহমুখী পরিষ্কার দিল নিয়ে সে আল্লাহর দরবারে হাজির হয়। দুনিয়াতেও নামায-দুআ ইত্যাদির মাধ্যমে সে আল্লাহর দরবারে হাজির হয়। আখেরাতেও যখন হাজির হবে, তখনও তার দিল থাকবে সাফ ও পরিষ্কার। যেখানে কোনো মুনাফেকী, কোনো পাপাচার নেই; বরং তার দিলটা আল্লাহর মহব্বতে পরিপূর্ণ। শুধু তাই নয়, আল্লাহর মহব্বত যেসব কাজের মধ্যে পাওয়া যায়, যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়, তাই সুন্নতকে মহব্বত করে। নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়, তাই নেক আমলকে মহব্বত করে। মসজিদ-মাদরাসার মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়, মসজিদ-মাদরাসাকে মহব্বত করে। দ্বীনের আলেমের মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়, আলেমকে মহব্বত করে। তালিবে ইলমের মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়, তালিবে ইলমকে মহব্বত করে। মা-বাবার খেদমতের মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়, মা-বাবাকে মহব্বত করে। অর্থাৎ তার সবকিছু আল্লাহ কেন্দ্রিক এবং আল্লাহমুখী। যাকে ভালবাসলে আল্লাহকে পাওয়া যাবে সে তাকে ভালবাসে। যাকে ভালবাসলে আল্লাহ নারায হবেন, আমি তাকে ভালবাসব না। إني وجَّهتُ وَجْهِيَ لِلَّذي فطرَ السَّماواتِ والأرضَ حنيفًا وما أنا مِنَ المُشْرِكين. আমি আল্লাহমুখী। আমার চেহারা আল্লাহর দিকে। এই যে নামাযে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়ালাম, কেবল চেহারা আল্লাহর দিকে, নাকি আমার দিলও আল্লাহর দিকে? কাজেই এভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে, নফল নামাযে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিয়ে আমার দিলটাকে প্রস্তুত করি, যাতে আমার দিলটাও আল্লাহমুখী হয়ে যায়! কোনোভাবেই যেন আল্লাহর নাফরমানীর দিকে না যায়। কারণ আল্লাহর নাফরমানীর দিকে যাওয়ার অর্থই হল, আমার দিল আল্লাহ থেকে সরে অন্য দিকে চলে গেছে! এজন্য আমাদের তওবা করা ফরয। তওবা করার অর্থ কী তওবা অর্থ ফিরে আসা। কোন্ দিকে ফিরে আসবেন? আপনি তো নিজ জায়গায়ই আছেন, আবার ফিরে আসবেন কীভাবে? অর্থাৎ এই যে গোনাহ করা হল, গোনাহ করা মানেই হল আল্লাহর দিক থেকে সরে যাওয়া। আল্লাহমুখী আর থাকা হল না। তাই তওবা করা ফরয। তওবা করে আবার আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে। أستغفرُ اللهَ الذي لا إلهَ إلّا هُوَ الحيُّ القيُّومُ وأتوبُ إليه. أستغفرُ اللهَ. আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। الذي لا إلهَ إلّا هُوَ. যিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নাই। সত্য মাবুদ একমাত্র আল্লাহ। কাজেই আমার যবান, দিল ও দেহ সবকিছু একমাত্র আল্লাহমুখী হয়ে যাওয়া উচিত। আমি যদি গোনাহ করে ফেলি, আল্লাহর নাফরমানী করে ফেলি, তাহলে তো আমি উল্টো পথ ধরলাম। জাহান্নামের পথে হাঁটা ধরলাম। আমার বাড়ি তো জান্নাত। কেন আমি জাহান্নামের পথে হাঁটছি? পাপ করা মানেই আমি উল্টো দিকে ফিরলাম। পাপ করা মানেই আমি জাহান্নামের রাস্তার দিকে হাঁটা ধরলাম। এজন্য তওবা করা ফরয। মনে রাখবেন, কোনো পাপকে দীর্ঘ করা যায় না। ভুল মানুষের হয়, কিন্তু ভুলের ওপর বসে থাকা যায় না। ভুলে গোনাহ হয়ে যায়, কিন্তু মুমিন গোনাহ করতে থাকে না, তওবা করে। তওবা করা ফরয। তাই মুমিন গোনাহ করে বসে থাকে না। أستغفرُ اللهَ الذي لا إلهَ إلّا هُوَ الحيُّ القيُّومُ وأتوبُ إليه. আমি ক্ষমা চাচ্ছি আল্লাহর কাছে, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই... আমি কোন্ দিকে হাঁটছি? কোথায় যাচ্ছি আমি? وأتوبُ إليه. আল্লাহ! আমি ফিরে আসছি। আপনি আমাকে গ্রহণ করুন। আমাকে দয়া করে আপনার রহমতের কোলে টেনে নিন! আমি অন্য দিকে ফিরব না। অন্য দিকে যাব না। আরেকটি দুআ- اللّٰهُمّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلٰهَ إِلّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيّ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنّهُ لاَ يَغْفِرُ الذّنُوبَ إِلّا أَنْتَ. আপনি যে দুআ পাারেন, যেই ভাষায় পারেন, আল্লাহর কাছে বলতে থাকুন। ইসতেগফারের কালিমা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কালিমার অভাব নেই। আপনি যেটা পারেন, যেই ভাষায় পারেন চাইতে থাকুন। সকল ভাষাই তো আল্লাহর সৃষ্টি। কাজেই আরবীতে না পারলে নিজের ভাষায় আল্লাহকে বলুন। আল্লাহর কাছে চাইতে থাকুন। আল্লাহ, আমার ভুল হয়ে গেছে, আপনি ক্ষমা করে দিন! আমি বাঁচতে চাই, আপনি আমাকে রক্ষা করুন! আমি শয়তান ও নফসের ধোঁকায় বা লোভে পড়ে যত পাপের পথে পা বাড়াব, আপনি আপনার রহমত দিয়ে আমাকে টেনে ধরে রাখবেন, যাতে আমি পাপের পথে না যেতে পারি! এভাবে যদি আমি দিল থেকে বারবার বলি, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই শুনবেন। এরপর যদি আমি পাপের পথে ধাবিত হই, সাথে সাথে আমার স্মরণ হবে- আরে, আমি আল্লাহর কাছে এত বার ক্ষমা চাইলাম, এখন কী করে আবার পাপে লিপ্ত হই! এভাবে যখন স্মরণ হতে থাকবে, আল্লাহ বাঁচার তাওফীক দেবেন ইনশাআল্লাহ। এর নামই হল তাকওয়া। لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ. ‘হাফীয’-এর একটা অর্থ হল গোনাহ থেকে বাঁচা। হালাল-হারাম বেছে চলা। হালাল গ্রহণ করা, হারাম থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহর হক ও বান্দার হক যথাযথভাবে আদায় করা। কোনো মাখলুকের কোনো হক নষ্ট করবে না। ‘হাফীয’-এর আরেক অর্থ আছে। সেটা হল, আল্লাহ যে আমাকে মায়ের গর্ভ থেকে বের করেছেন- পবিত্র বের করেছেন, নাকি অপবিত্র? পবিত্র বের করেছেন। শুধু পবিত্র নয়, বরং নিষ্পাপ। অর্থাৎ দেহটা যেমন পাক, কোনো ময়লা নেই, তদ্রূপ মন ও আমলনামাটাও পাক-পবিত্র। কাজেই তুমি সেটাকে গোনাহের ময়লা দ্বারা গান্দা ও কলুষিত করো না। ভুলে কখনো নাপাক হয়ে গেলে সাথে সাথে পাক করার ব্যবস্থা করো। যেমন শরীরে কোনো নাপাক লাগলে সাথে সাথে ধুয়ে ফেলি। শরীরে নাপাক নাগলে ধোয়া হয় পানি দিয়ে। গোনাহের ময়লা ধুতে হয় তওবা ও ইসতিগফার দিয়ে। এর নাম হল- ‘হাফীয’। مَنْ خَشِیَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَیْبِ وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِیْبِ. যার দিলে আল্লাহর ভয় আছে, যে বেশি বেশি তওবা করে, হালাল-হারাম বেছে চলে, সে দিলকে গোনাহের ময়লা দিয়ে অপবিত্র করে না। গোনাহ হয়ে গেলে তওবা করে পাক-সাফ করে ফেলে। এর নাম হল মুত্তাকী। এই ধরনের মুত্তাকীদের সামনে হাশরের মাঠে জান্নাত পেশ করা হবে। এটা হল সেই জান্নাত, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দুনিয়াতে করা হয়েছে। ادْخُلُوْهَا بِسَلٰمٍ. জান্নাতে প্রবেশ কর নিশ্চিন্তে, নিরাপদে। সেখানে কোনো কষ্ট নেই। কোনো পেরেশানী নেই। আর সেখানে তোমাকে এই চিন্তাও করতে হবে না যে, কত দিন থাকতে পারব এই সুখের জান্নাতে? কারণ আল্লাহ বলেছেন- ذٰلِكَ یَوْمُ الْخُلُوْدِ. এখানে প্রবেশ করার পর আর তোমাকে বের করা হবে না। কোনো মুমিন -আল্লাহ মাফ করুন- তার পাপাচারের কারণে যদি জাহান্নামে চলেও যায়, একসময় সেখান থেকে বের হয়ে জান্নাতে চলে আসবে। কিন্তু জান্নাতে গিয়ে কেউ কখনো আর সেখান থেকে বের হবে না। সেখান থেকে বের হওয়ার কোনো প্রশ্ন নেই। لَهُمْ مَّا یَشَآءُوْنَ فِیْهَا وَ لَدَیْنَا مَزِیْدٌ. আর সেখানে যাওয়ার পর যা চাওয়া হয় তাই পাওয়া যাবে। মানুষের চাওয়ার শেষ হতে পারে, আল্লাহর দেয়ার শেষ হবে না। কত চাইবে তুমি, চাইতে থাক। তোমার চাওয়ার শেষ আছে, আল্লাহর দেয়ার কোনো শেষ নেই। اِنَّهٗ مَنْ یَّتَّقِ وَ یَصْبِرْ فَاِنَّ اللهَ لَا یُضِیْعُ اَجْرَ الْمُحْسِنِیْنَ. যার মধ্যে তাকওয়া আর সবর আছে সে ভালো মানুষ। আল্লাহ তার সওয়াব নষ্ট করবেন না। সবরের অর্থ ও তার প্রকার বিপদ-আপদ আসলে ধৈর্যহারা না হয়ে ধৈর্য ধারণ করা হল সবরের চার প্রকারের এক প্রকার। বিপদাপদ আসলে ধৈর্যহারা হব না। কারণ বিপদাপদ যা আসছে, সব আল্লাহর হুকুমেই আসছে। হয় আমার গোনাহের কারণে আসছে, নয়তো আমার পরীক্ষার জন্য আসছে বা মর্তবা বুলন্দ করার জন্য আসছে। এজন্য তখন কাজ হল আল্লাহর কাছে তওবা করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা। হতে পারে, এই বিপদাপদের কারণে আল্লাহ আমার অনেক গোনাহ মাফ করে দেবেন। যাইহোক, বিপদাপদ আসলে ধৈর্য ধারণ করা সবরের এক প্রকার। এছাড়াও আরো সবর আছে। সবরের দ্বিতীয় প্রকার সবরের আরেক প্রকার হল, নেক কাজে সবর করা। আচ্ছা, নেক কাজ করতে সবর লাগে কি না? লাগে। শীতের ঠাণ্ডাতে ফজরের নামাযের জন্য আরামের বিছানাটা ছেড়ে ওঠা, উঠে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ওজু করে মসজিদে যেতে কষ্ট হয় কি না? অনেকসময় এমনিতেও মন চায় না। গতকাল এশার নামায মসজিদে গিয়ে আদায় করলাম, কিন্তু আজকে আর মন চাচ্ছে না। তো এই যে কষ্ট বা মন না চাওয়া, সেটার ওপর নিজে জয়ী হওয়া এবং আজকের এশার নামাযও মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে আদায় করা। মোটকথা, জোর করে যে নেক আমলটা করা হয়, কষ্টের পরও করা হয়- এটার নামও সবর। যে নেককাজ আমার ওপর ফরয ও অবশ্যপালনীয়, সেই নেক কাজ করতে গিয়ে ধৈর্যহারা হলে চলবে না; আমাকে আমলটা করতেই হবে। বিশেষত ফরয-ওয়াজিব কোনোভাবেই ছাড়া যাবে না। সুন্নতে মুআক্কাদা, যার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক তাকিদ করেছেন, সেটাও আদায় করব। হাঁ, মুসতাহাব-নফলের মাঝে ছাড় আছে। কিন্তু কথা হল, কোনো নেককাজের মহব্বত যদি একবার অন্তরে বসে সেটা কি আর কখনো ছোটে? আমাদের যেসব সাথীরা তিন দিনের, দশ দিনের মজা পেয়ে গেছেন, তাদেরকে কি কেউ নাম লেখানোর জন্য হাতে-পায়ে ধরতে হয়, নাকি নিজের থেকেই নাম লেখায়? সবরের তৃতীয় প্রকার আরেক সবর হল গোনাহ থেকে বাঁচা। গোনাহ করতে মন চাইলেও ধৈর্য ধরে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা। ভুলে একবার হয়ে গেলে বারবার তওবা করতে থাকব। এতে শয়তান ভয় পাবে। শয়তান ভাববে, এই লোককে গোনাহ করিয়ে লাভ কী? একবার গোনাহ করালে সে তো শত বার তওবা করে! হিসাব-নিকাশ করে শয়তান দেখবে, তার লস ও ক্ষতি হচ্ছে। তাই পরে দেখবেন, সে আর বেশি আসছে না। তাহলে সবরের তিন প্রকার গেল। বালা-মুসিবতে সবর করা। ধৈর্য ধরে নেক কাজ করতে থাকা। ধৈর্য ধরে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা। সবরের চতুর্থ প্রকার সবরের আরেক প্রকার হল যে কোনো নেককাজকে ভালো থেকে ভালো করার চেষ্টা করা। অনেক ভাই আছেন, নামাযে গেলে রুকু-সিজদা ঠিকমতো করতে পারেন না। রুকুতে এই যেতে না যেতেই উঠে যান। রুকু তো এমন জিনিসের নাম নয়। দেখুন, নামাযে যত আমল রয়েছে, এগুলো প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা কাজ। আপনি হয়তো মনে করছেন, কোনোটা মূল কাজ আর কোনোটা ভায়া। যেমন আসল হল দুই রাকাত পড়া আর দাঁড়ানো ওঠানামা হল ভায়া। সিজদা হল আসল, রুকুতে যাওয়া-আসা হল তার জন্য ভায়া। না, বিষয়টা এমন নয় ভাই! বরং রুকু স্বতন্ত্র আমল এবং নামাযের ফরয আমল। রুকুতে গিয়ে উভয় হাত ও হাঁটু সোজা রাখতে হবে। কোমর, পিঠ ও মাথা এক বরাবর রাখতে হবে। সামনে-পিছে কোনো দিকে ঝুঁকানো যাবে না। কারো যদি কোমরে বা পায়ে ব্যথা থাকে সেটা ভিন্ন কথা। তাছাড়া রুকুতে গিয়ে আমাকে স্থির থাকতে হবে। রুকুতে গিয়ে যদি এমন ভাব হয় যে, কখন যে উঠব, কখন যে উঠব- ইমাম মাথা ওঠাচ্ছে না কেন? তাহলে এতে রুকুর হক আদায় হবে না। রুকুতে গিয়ে ধীরস্থিরভাবে কমপক্ষে তিন বার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম’ পড়ুন। রুকুতে স্থির হয়ে থাকা ওয়াজিব। মনে রাখা উচিত, রুকু নামাযের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, আমি রুকুর সেই ফরযটা আদায় করছি। আর যদি বলেন, হুজুর! আমি যতই চেষ্টা করি, তিন বার সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম পড়তে আমার বেশি সময় লাগে না, তাহলে আপনাকে আমি বলব, আপনি পাঁচ বার পড়ুন, সাত বার পড়ুন! তারপরও আপনি স্থির হয়ে থাকুন। কারণ রুকু নামাযের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, আমি সেটা আদায় করছি। আল্লাহ আমাকে যেভাবে তাঁর সামনে ঝুঁকতে বলেছেন সেভাবে ঝুঁকে আছি আমি। রুকু থেকে ওঠার পর কওমা করতে হবে শান্তশিষ্টভাবে। কওমা স্বতন্ত্র একটা কাজ এবং নামাযের একটা অংশ। কওমার সময় দাঁড়িয়ে বলুন- ‘রব্বানা লাকাল হামদ’। কোনোভাবেই তাড়াতাড়ি করা যাবে না। যদি এমন হয় যে, দুআটা পড়তে আপনার সময় লাগে না, তাহলেও আপনি সিজদার দিকে সাথে সাথে চলে যাবেন না, বরং স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন। কারণ এই ‘কওমা’ও একটা স্বতন্ত্র আমল এবং নামাযের একটা আমল। তাই তাড়াহুড়ো না করে আমাকে স্থির হয়ে দাঁড়াতে হবে। ‘রব্বানা লাকাল হামদ’-এর চেয়ে আরো লম্বা দুআও পড়তে পারি- اللّهُمّ رَبّنَا وَلَكَ الْحَمْد. বা পড়তে পারি- اللّهُمّ رَبّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ. এর চেয়েও লম্বা একটা দুআ আছে। আমরা বলছি না যে, আপনাকে পুরোটাই পড়তে হবে; ছোটোটাই পড়ুন- ‘রব্বানা লাকাল হামদ’। অথবা একটা ‘ওয়াও’সহ যে দুআটি আছে তা পড়ুন। একটা ‘ওয়াও’-এর কারণে সওয়াব অনেক বেড়ে যাবে। অনেকে রুকু থেকে দাঁড়াতে দাঁড়াতে এ দুআ পড়ে। এমনটি করব না। পুরো সোজা হয়ে দাঁড়াব, একদম স্থির হয়ে তারপর দুআ পড়ব। আবার অনেককে দেখা যায়, সিজদায় যেতে না যেতেই উঠে যায়। অথচ সিজদার নিয়ম হল, সিজদার সময় সাতটি অঙ্গ জমিনে লাগতে হবে। বিশেষ করে কপাল আর নাক তো জমিনে লাগতেই হবে। যদি এই দুটো অঙ্গ জমিনে না লাগে তাহলে সিজদাই সহীহ হবে না। দুই পায়ের পাতা, দুই হাঁটু, দুই হাতের পাঞ্জা এবং নাক-কপাল জমিনে লেগে থাকতে হবে স্থিরভাবে। অনেকে আবার সিজদার সময় কপাল জমিনে লাগায় ঠিকই, কিন্তু নাক জমিন থেকে আলাদা রাখে। আবার কিছু মানুষ সিজদাতে এক পা আরেক পায়ের ওপর উঠিয়ে খেলা করে, যেন তিনি চেয়ারে বসেছেন! অথচ উভয় পায়ের পাতা জমিনের সাথে লেগে থাকা উচিত। চেষ্টা করা- যেন উভয় পায়ের পাঁচ আঙ্গুলই জমিনে লেগে থাকে। তা যদি না পারি, কমপক্ষে দুই আঙ্গুল বা তিন আঙ্গুল যা পারি সেটাই করি। আচ্ছা, পুরুষ আর মহিলার নামাযের মধ্যে পার্থক্য আছে না? আছে। কিন্তু আমরা অনেকসময় এমনভাবে সিজদায় যাই যে, রান আর পেট একসাথে মিলে থাকে। হাতের বাহুগুলোকে শরীরের সাথে লাগিয়ে রাখি। অথচ পুরুষের সিজদার ব্যাপারে বলা হয়, এমনভাবে সিজদা করবে, যাতে হাতের নিচ দিয়ে বকরির বাচ্চা স্বাভাবিকভাবে চলে যেতে পারে। হাঁ, কারো ওজর থাকলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু অনেকের হাবভাবে মনে হয়, নামায বুঝি বিশ্রাম করার জন্য! তারপর সিজদায় গিয়ে আমাকে কমপক্ষে তিনবার সহীহ-শুদ্ধভাবে পড়তে হবে- ‘সুবহানা রব্বিয়াল আ‘লা’। আর সিজদাতেও ধীরস্থির ও শান্তভাবে থাকা ওয়াজিব। এরপর দুই সিজদার মাঝখানে বসতে হয়। কিন্তু অনেককে দেখে মনে হয়, তিনি বসতেই রাজি নয়। এক সিজদা থেকে না উঠতেই আরেক সিজদায় রওয়ানা হয়ে যান! এটা করলে ওয়াজিব লঙ্ঘন করা হল। এখানেও দুআ আছে। আপনি পড়তে পারেন- ‘আল্লহুম্মাগ ফিরলী’ বা ‘রব্বিগ ফিরলী’। কয়েক বারও পড়তে পারি। কিন্তু আমাদের ধারণা হল, নামাযের মধ্যে যেখানে যেটা পড়তে হয়, সেটা যদি আমি একবার পড়ে ফেলি, তাহলে আর সেখানে কাজ নেই। আরে, দুই সিজদার মাঝে বসে থাকাটাই একটা কাজ। আপনি যদি ‘আল্লহুম্মাগ ফিরলী’ বা ‘রব্বিগ ফিরলী’ নাও পড়েন, শুধু স্থির হয়ে বসে থাকেন, সেটাও একটা আমল। কারণ এর দ্বারা জলসার ওয়াজিব আদায় হবে। এর কারণেও আপনি সওয়াব পাবেন। যারা দুই সিজদার মাঝখানে ঠিকমতো বসেন না, তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন- তারা কি দুই সিজদা করছে, নাকি এক সিজদা? এজন্য বললাম, সবরের চার নাম্বার প্রকার হল, সকল ইবাদত সুন্দরভাবে এবং যথাযথভাবে করা। কিন্তু আমরা অনেকে ইবাদত করি বটে, কিন্তু মনযোগটা ঠিকমতো থাকে না। ইমাম সাহেব যখন কেরাত পড়েন, তখন অপেক্ষায় থাকি- কখন যে রুকুতে যাবে! আর যখন একা একা নামায পড়ি তখন তো কথাই নাই। সব নিজের ইচ্ছা! যত ছোট্ট থেকে ছোট্ট সূরা পড়ে শেষ করা যায়। আর রুকুতে গিয়ে কখনো তিন বারের বেশি পড়ি না। অথচ পাঁচ বার, সাত বারও পড়া যায়। আরে ভাই, মাঝে মাঝে সাত বার, নয় বার পড়ুন না! কে আপনাকে নিষেধ করবে? এর পরের কথা হল, নামাযে যা পড়া হয়, সেগুলো সহীহ-শুদ্ধ হওয়াও জরুরি। তার জন্য আমাদেরকে মশক করতে হবে। এরপর আমরা যে দুআয়ে মাসূরা পড়ি, এরকম দুআয়ে মাসূরা কয়টা? দুআয়ে মাসূরা অর্থ, কুরআন-হাদীসে বর্র্ণিত দুআ। কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দুআ এক-দুইটা নয়; শত শত। কিন্তু আমরা যেহেতু এত শত দুআ মুখস্থ করতে পারব না, তাই আমাদের মা-বাবা আমদেরকে ছোটবেলায় একটা মুখস্থ করিয়ে দিয়েছেন। সেটা হল- اللّٰهُمّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا، وَلاَ يَغْفِرُ الذّنُوبَ إِلّا أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي إِنّكَ أَنْتَ الغَفُورُ الرّحِيمُ. কিন্তু আমরা মনে করি, দুআয়ে মাসূরা কেবল একটাই! আমার কথা হল, আপনাকে সব পড়তে হবে না, একটাই পড়ুন, কিন্তু যেটাই পড়ব, সহীহ-শুদ্ধ ও ধীরস্থিরভাবে পড়তে হবে। সহীহ-শুদ্ধ পড়ার জন্য আগে মাখরাজ ও উচ্চারণ শিখতে হবে। কেবল উচ্চারণ শিখলেই হবে, নাকি অর্থ ও মর্মও শিখতে হবে? দুআয়ে মাসূরার অর্থ নামাযের শেষে আমরা যে দুআয়ে মাসূরা পড়ি, তার কী অর্থ? اللّٰهُمّ হে আল্লাহ! اِنّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا. আমি তো নিজের প্রতি অনেক জুলুম-অবিচার করে ফেলেছি। কত গোনাহ, কত পাপ করেছি! কারণ একটা ফরয লঙ্ঘন করা এক জুলুম নয়, অনেকগুলো জুলুম। একটা গোনাহে জড়িত হওয়া একটা জুলুম নয়, অনেক জুলুম। وَلاَ يَغْفِرُ الذّنُوبَ إِلّا أَنْتَ. ক্ষমা একমাত্র আপনিই করতে পারেন। আপনি ছাড়া আর কেউ ক্ষমা করতে পারে না। নাফরমানী করা হয়েছে আপনার, ক্ষমাও একমাত্র আপনিই করতে পারেন। আপনি ছাড়া আর কেউ পারে না ক্ষমা করতে। তাছাড়া আপনিই যেহেতু একমাত্র মাবুদ ও মালিক, তাই আপনিই পারেন ক্ষমা করতে। আর কেউ পারে না। فَاغْفِرْ لِي. আল্লাহ! কাজেই আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ. আপনার কাছে যে ক্ষমা চাচ্ছি, এটা আমার প্রাপ্য বা অধিকার নয়, এটা আপনার পক্ষ থেকে দয়া ও মেহেরবানী। কারণ আমি তো পাপ করে আপনার আরো দূরে সরে গিয়েছি। তাই আপনার কাছে আমার কোনো পাওনা বা দাবি-দাওয়া নেই; বরং আপনার দয়া আর মেহেরবানীতে আপনার পক্ষ থেকে আপনি আমাকে মাগফিরাত দান করুন। আপনার দানের ভা-ার থেকে আমাকে দান করুন মাওলা! তাহলে দেখুন, কেমন মর্মস্পর্শী দুআ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিখিয়েছেন! আল্লাহর কাছে এভাবে বলো, এভাবে কাঁদো! নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিয়েছ, এতক্ষণ আল্লাহর বিশেষ দরবারে ছিলে। এখন দরবারের আলাপ-সালাপ, কথাবার্তা শেষ। তোমার হাজিরা যদি কবুল হয়ে থাকে, তাহলে এখন হাজিরা শেষে আল্লাহর কাছে কী চাইবে, চাও! কেমন যেন আল্লাহ বলছেন, আমার দরবারে তো এসেছ, আচ্ছা, এখন যা চাওয়ার চেয়ে নাও! ফলে ওই সময় কত সুন্দর করে আল্লাহর কাছে আমরা চাইতে পারি- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটা আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। কত সুন্দর দুআ আমাদের শিখিয়েছেন! فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ. আল্লাহ! ক্ষমা আপনার দান, আপনি মেহরবানী করে ক্ষমা করে দিন! وَارْحَمْنِي. কেবল মাগফিরাত নয়, আমার প্রতি আপনি রহমতও বর্ষণ করুন। আমার প্রতি দয়া করুন। إِنّكَ أَنْتَ الغَفُورُ الرّحِيمُ. আপনি গফুর! আপনার ‘গফুর’ নামের বরকতে আমাকে মাগফিরাত দান করুন। আপনি রহীম! আপনার ‘রহীম’ নামের বরকতে আপনি আমার প্রতি রহমত বর্ষণ করুন। এসব বলার পর এবার বলুন- ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ!’ এটা হল এক ধরনের নামায। আর যদি এমন হয় যে, নামায শুরু করলাম, শেষ করলাম, কোন্ দিকে মন, কোথায় আমার খেয়াল, সেটার কোনো গুরুত্ব নেই তাহলে কেমন হবে? নামাযের সওয়াবে পার্থক্য হয় কীভাবে একই কাতারে নামায পড়ছি, কার নামাযের কী অবস্থা, আল্লাহর কাছে তো সবকিছুরই হিসাব আছে। যদি মার্ক বা নম্বর দেয়া হয়, যদি মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে অনেক পার্থক্য হয়ে যাবে। পার্থক্য হয় কীভাবে? পার্থক্য হয় খুশু-খুযূ-এর মাধ্যমে। পার্থক্য হয় সুন্নতের অনুসরণের মাধ্যমে। নামাযটা কতটুকু খুশু-খুযূর মানে উত্তীর্ণ, নামাযের মধ্যে আমার দিলটা কী পরিমাণ হাজির ছিল, সেই হিসেবে মূল্যায়ন ও পার্থক্য হবে। আর এই খুশু-খুযূর জন্য নামাযে যা পড়া হয় সেগুলোর সহীহ-শুদ্ধ উচ্চারণ শিখতে হবে এবং মর্মও ঠিকভাবে বুঝতে হবে এবং পুরো নামায সুন্নত মোতাবেক হতে হবে। এই দুটো বিষয় যদি আজকের মজলিস থেকে আমরা নিতে পারি, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমরা সফল। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ভরপুর তাওফীক দান করুন- আমীন। وآخرُ دعوانا أن الحمدُ للهِ ربِّ العالمين. শ্রুত লিখন : মাওলানা মুহম্মাদুল্লাহ মাসুম

 

 

THIS IS A SACRED INFORMATION IN BENGALI ABOUT ECONOMIC CRISIS

 Bmjvg Ges L„ó a‡g© Pjgvb wek¦ A_©‰bwZK g›`v I Lv`¨vfv‡ei KviY†gvnv¤§v` b~i“j Bmjvg web Zvwni Avjx kªxcyix- KvbvBNvU, wm‡jU,evsjv‡`k|                                                                             Avj­vn Zvqvjv e‡jb, †Zvgv‡`i Dci †hme wec`vc` cwZZ nq Zv †Zvgv‡`i K‡g©iB dj| Avj KziAvb (myiv Avk ïiv-AvqvZ 30) nhiZ Avey gymv iv.†_‡K ewY©Z ivmyjyj­vn mvj­vj­vû Avjvwn Iqv mvj­vg Bikv` K‡i‡Qb, †Mvbv‡ni Kvi‡Y ev›`v Kó cvq Ges Dc‡iv³ AvqvZwU cvV K‡ib| A_ev ûRyi mvj­vû AvjvBwn Iqv mvj­vg †hfv‡e e‡j‡Qb, wZiwghx,Avngv`|nhiZ Avkivdzj gvkvBL e‡jb, ˆ`wnK cxov I Kó †hgb †Mvbv‡ni Kvi‡Y nq, †Zgwb AvwZ¥K e¨vwaI †Kvb †Mvbv‡ni djkÖ“wZ‡Z n‡q _v‡K| (Zvdmx‡i gvAvwidzj †KvivAvb)eZ©gvb (2008-2009) Avw_©K I Lv`¨ m¼U we‡k¦i me‡P‡q eo ûgwK n‡q ‡`Lv w`‡q‡Q| †Kbbv Avw_©K I Lv`¨ m¼U jvL jvL gvbyl‡K `wi`ª I ¶yä K‡i Zzj‡Q| ïay Av‡gwiKvi Avw_©K Kg©Kv‡Ûi ch©v‡jvPbv †_‡K †`Lv hvq 1795 †_‡K 1937 Bs‡iRx ch©š— †gvU 17 evi Avw_©K Kg©Kv‡Êi PµvKv‡i AvewZ©Z n‡q‡Q| cÖwZwU P‡µi Mo w¯’wZ wQj 8.35 eQi| GLb m¼U †h fqven iƒc wb‡q‡Q, Zv‡Z A‡bK ey‡R©vqv cwÊZivI AvZw¼Z n‡q D‡V‡Qb| †Kvb †Kvb wgwWqv e‡j‡Q, cyuwRev‡`i Aemvb| MZ kZvwãi 90 Gi ïi“‡Z dzwKqvgv e‡jwQ‡jb, mgvRZ‡š¿i Aemv‡bi K_v| GLb Zviv ej‡Qb, cyuwRev‡`i Aemv‡bi K_v|   wcÖq cvVK! eZ©gvb Av_© am I Lv`¨ msK‡Ui KviY Ges Df‡qi Kvi‡Y Avgv‡`i‡K †h mg¯— wec‡`i gy‡LvgywL n‡Z nq †m m¤ú‡K© gymwjg `vk©wbK kvn Iqvjx Dj­vn gynvwχm †`njfx in. û¾vZzj­vwnj evwjMvn MÖ‡š’ e‡jb, G RM‡Z fvj-g›` wec`-m~L Kó I Aviv‡gi KviY `y cÖKviGK. ewn¨K|`yB. Avf¨š—ixY|myZivs Pjr wek¦e¨vcx A_©‰bwZK g›`v I Lv`¨vfv‡ei evwn¨K KviY: †kqvi, wewb‡qvM, A_©bxwZ I e¨vsK mg~n cwiPvjbvi Awbqg,cyyuwRev`, hy×-weMÖn, †hŠ_ KviY (my`), MÖxb nvDm M¨vm,(Green house gas) evqygÛ‡j DòZv e„w×, wek¦ Rjevqy cwieZ©b, `vwi`ª I cÖvK…wZK `~‡hv©M BZ¨vw` Ges Avf¨š—ixY wKQy KviY ms‡¶‡c D‡j­L Kiv n‡”Q 

 GK.Avj­vn Zvqvjvi ûKzg Agvb¨ Kiv| Avj­vn cvK e‡jb, †h Avgvi ¯§iY †_‡K gyL wdwi‡q †b‡e Zvi RxweKv m¼xY© n‡e| Avj †KviAvb myiv †Z¡vqv nv-AvqvZ 124| 

 `yB. whbv ev e¨vwfPvi| ivm~jyj­vn mvj­vû Avjvwn Iqv mvj­vg e‡jb, whbv †h RvwZi g‡a¨ †`Lv †`q, Zv‡`i‡K `ywf©¶ Øviv †MÖdZvi Kiv nq| gymvb‡` Bgv‡g Avngv` ivn.| weL¨vZ m~dx mvaK gvIjvbv kvBL Rvjvj DÏxb i“gx ivn. Zvi Kve¨ K_vq e‡jb, hvKvZ bv †`Iqv‡Z nq eÜ e„wó-e¨vwfPvi cÖPv‡i nq gnvgvix m„wó| (gmbfx kixd) 

 wZb.IR‡b Kg Kiv| Avj­vn Zvqvjv e‡jb, hviv gv‡c Kg K‡i Zv‡`i Rb¨ `~‡fv©M| Avj †KviAvb myiv AvZ ZvZ¡dxd AvqvZ-1| nv`xm kix‡d ejv n‡q‡Q, hviv IR‡b Kg K‡i Zviv `ywf©¶,g„Zz¨i Kó I kvmK‡`i AZ¨vPv‡i cvKovIK…Z nq| wgkKvZ| 

 Pvi. g`|          ivm~jy mvj­vj­vû Avjvwn Iqv mvj­vg GKwU ev‡K¨i gva¨‡g cÖKvk K‡i‡Qb, kive cvc‡K Rgv K‡i| (A_ev ûRyi mvj­vj­vû †hfv‡e e‡j‡Qb) GLb iBj g`¨cv‡bi Avw_©K w`KwU| hw` †Kvb GjvKvq GKwU kiveLvbv †Lvjv nq,Z‡e Zv mg¯— GjvKvi UvKv cqmv jy‡U †bq| GK_v me©Rb wew`Z G e¨‡qi cwigvY I ch©vq eû iK‡gi| GKRb wewkó cwimsL¨vbwe‡`i msM„wnZ Z_¨vbyhvqx ïay GKwU kn‡i kiv‡ei †gvU e¨q mvgMÖxK Rxeb hvÎvi Ab¨vb¨ mKj e¨‡qi mgvb| (Zvdmx‡i gvAvwidzj †KviAvb) 

 cuvP. cyuwRev` Z_v my` (Interest)|              Avj­vn Zvqvjv e‡j‡Qb, Avj­vn my`‡K wbwðnè K‡i †`b| (Avj KziAvb-myiv Avj evK¡viv, AvqvZ 276) G Dw³I ciKv‡ji w`K w`‡q †Zv m¤úyY© cwi¯‹vi| mZ¨cjwäi mvgvb¨ †Póv Ki‡j `ywbqvi w`K w`‡qI my¯úó| ûRyi mvj­vj­vû AvjvBwn Iqv mvj­v‡gi G Dw³i D‡Ï¨k¨I ZvB| my` hw`I e„w× cvq wKš‘ Gi †kl cwiYwZ n‡”Q ¯^íZv| Be‡b gvRvn,evBnvK¡x, gymbv‡` Avngv`| AvRKvj †h my`‡K cÖPwjZ A_©bxwZi cÖavb ¯—¤¢ g‡b Kiv nq,†m my‡`i A‰eaZv KziAv‡bi mvZwU AvqvZ Pwj­kwUiI †ewk nv`xm Ges BRgv Øviv cÖgvwYZ eZ©gvb hy‡M my` gnvgvixi AvKvi aviY K‡i‡Q| mgMÖ wek¦ Gi ivû MÖv‡m cwZZ| GwU gvbe i“wP‡K wewµZ K‡i w`‡q‡Q d‡j gvbyl †h welqwU mgMÖ gvbeZvi Rb¨ A_©‰bwZK wech©‡qi KviY Zv‡KB Zv‡`i A_©‰bwZK mgm¨vi mgvavb fve‡Z ïi“ K‡i‡Q| my` †KejgvÎ Bmjvg a‡g© wbwl× bq Ab¨vb¨ a‡g©I my`‡K wbwl× Kiv n‡q‡Q| †hgb L„ó a‡g© my` m¤ú‡K© ejv n‡q‡Q, †h e¨w³ my` I Gi e„w× wb‡q ab evovq, Zvi mKj cÖv_©bv N„Yvi mv‡_ cÖZ¨vL¨vZ| Ab¨ RvqMvq ejv n‡q‡Q, †Kvb e¨w³ hw` my‡`i †jv‡f FY bv †`q, Z‡e †m e¨w³ Aek¨B avwg©K| †m Aek¨B evuP‡e| AviI ejv n‡q‡Q, FY `vI| wewbg‡q wKQy cÖZ¨vkv K‡ivbv| (L„óvb) `vk©wbK Gwi‡÷vUj Zvi ÕcwjwU·Õ (Politics) MÖ‡š’ D‡j­L K‡i‡Qb,my` n‡jv gvby‡li m‡½ GK ai‡Yi RvwjqvwZ Kiv| Ab¨ Av‡iK Rb `vk©wbK †c­‡Uv Zvi Ô†jŠhÕ (Laws) bvgK MÖ‡š’i g‡a¨ D‡j­L K‡i‡Qb,my` n‡jv mgv‡Ri me‡P‡q wb›`bxq KvR| _gvm e‡jb, my` n‡jv GKcÖKvi AwePvi| Ggwbfv‡e Bû`x,†eŠ×,wn›`y ag© mn me ag© I ag© we‡klÁ‡`i Awfe¨w³i gva¨‡g my` wbwl× nIqvi welqwU cwi®‹vi fv‡e D”PvwiZ n‡q‡Q| GLb Avevi Avmyb, Avgv‡`i wcÖq bexRx mvj­vj­vû AvjvBwn Iqv mvj­vg whwb mKj m„wó RM‡Zi Rb¨ Av`k© wZwb Kx e‡j‡Qb! we`vq n‡¾i HwZnvwmK †gveviK fvl‡Y wZwb e‡jwQ‡jb, AvR‡Ki w`e‡m me ai‡Yi my` iwnZ Kiv n‡jv| me© cÖ_g Avgvi PvPv Avãyj­vn Be‡b AveŸv‡mi my` iwnZ Kiv n‡jv| ivm~jyj­vn mvj­vû AvjvBwn Iqv mvj­vg Gi GB †NvlYvi ci DgvBq¨vn I AveŸvmxq wLjvdv‡Zi ciI cÖvq bq k eQi ch©š— Aa© c„w_ex‡Z my‡`i †Kvb Aw¯’Z¡ wQj bv| Zvici ax‡i ax‡i GB my‡`i wel ev®ú wek¦ e¨vcx Qwo‡q c‡o| Bmjvgx Rxeb e¨e¯’vi weavb n‡”Q GB †h, †hme e¨e¯’vq mgMÖ RvwZi m¤ú` gywó‡gq K‡qK e¨w³i nv‡Z Rgv nIqvi c_ †Lv‡j †mme¸‡jv cš’vB nvivg| G cÖm‡½ †KviAvb †NvlYv K‡i‡Q m¤ú` e›Ub Kivi †h wbqg †KviAvb wbav©iY K‡i‡Q Zvi D‡`¨k¨ GB †h, ab-‡`ŠjZ †hb K‡qKRb cyuwR cwZi nv‡Z cywÄf~Z n‡q bv c‡o| myiv Avj nvkvi, AvqvZ-7| weL¨vZ gymwjg ivóª weÁvbx Avj­vgv gvIjvbv gykvwn` evqgcyix wm‡jUx ivn. Gi cÖYxZ ivRbxwZ MÖš’ dvZûj Kvix‡g e‡jb, A_©‰bwZK e¨e¯’v‡K wech©¯— I aŸsm Kivi R‡b¨ my`B me‡P‡q †ekx cÖfvekvjx| GwU GKwU Awfkß aŸsmvZ¥K e¨vwa| my` A_© e¨e¯’v‡K G‡Kev‡i `wi`ª I Amnvq K‡i Zz‡j Ges mviv †`‡ki ab m¤ú` GK we‡kl †kªYxi wbKU cywÄf~Z K‡i Ges Zv‡`i‡KB ab m¤ú‡`i GKK wVKv`vi evwb‡q †`q| †KviAvb nv`xm Zvdmxi I Ab¨vb¨ agx©q MÖš’vejx my‡`i g›`Zv I AwfkßZvi eY©bvq mg„×| ûRy‡i AvKivg mvj­vj­vû AvjvBwn Iqv mvj­vg bvRiv‡bi L„óvb‡`i mv‡_ mwÜ Pzw³ K‡i‡Qb Ges Zv‡`i‡K me© cÖKvi agx©q ¯^vaxbZv `vb K‡i‡Qb| Z‡e my‡`i cÖwZ wb‡lavÁv evwK †i‡L‡Qb Ges Bikv` K‡i‡Qb, Ges Zviv †hb  my` bv Lvq| Bgvg Avey `vD` ivn.wKZveyj Lviv‡Ri g‡a¨ mwe¯—v‡i G nv`xm eY©bv K‡i‡Qb, ivm~‡j gvK¡eyj mvj­vj­vû AvjvBwn Iqv mvj­vg ÒGes ‡hb my` bv LvqÓ G evK¨wUi gva¨‡g †h A_©‰bwZK gnv Kj¨v‡Yi w`K we‡ePbvq wb‡q‡Qb AvR hw` †Kvb miKvi ZrcÖwZ gb‡hvMx n‡Zv Zvn‡j c„w_exUv Rvnvbœvg Kz‡Ê cwiYZ n‡Zv bv|  

Qq.Afve MÖ¯’‡`i mvnvh¨ bv Kiv|   ivmyj cvK mvj­vj­vû AvjvBwn Iqv mvj­vg Bikv` K‡ib, †Zvgiv Avgv‡K `ye©j  `wi`ª‡`i g‡a¨ AbymÜvb K‡iv| KviY `ye©j `wi`ª‡`i Kvi‡YB †Zvgiv i“Rx cÖvß nI| A_ev mvnh¨K…Z nI| eocxi nhiZ Avãyj Kvw`i wRjvbx ivn. e‡jb, Kw_Z Av‡Q GK mgq ebx BmivC‡j `ywf©¶ †`Lv w`‡j Zviv mevB GK‡Î GKRb bexi Kv‡Q Avmj Ges ej‡Z jvMj Avcwb Avgv‡`i Ggb Kv‡Ri K_v ejyb, hØviv Avj­vn Zvqvjv mš‘ó nb †h Avgiv Zv Ki‡ev I Bnv Avgv‡`i wec` D×v‡ii †nZz nq| bex AvjvBwnm mvjvg Avj­vn cv‡Ki wbKU cÖv_©bv Ki‡j Avj­vn Zvqvjv bexi Kv‡Q Inx †cÖiY K‡ib †h, Zv‡`i‡K e‡j w`b †Zvgiv hw` Avgvi mš‘wó PvI Z‡e wgmwKb AfveMÖ¯’‡`i‡K mš‘ó K‡iv| hw` †Zvgiv Zv‡`i‡K mš‘ó K‡i bvI, Zvn‡j Avwg ivRx n‡ev| Avi hw` †Zvgiv Zv‡`i‡K bvivR Ki‡e Z‡e AvwgI bvivR n‡ev| ïb †n eyw×gv‡biv! †Zvgiv me mgq `wi`ª‡`i‡K bvivR K‡iv, Abš—i Avj­vn cv‡Ki mš‘wóI PvI| Zuvi mš‘wó †Zvgv‡`i nv‡Z KL‡bv Avm‡ebv ‡Zvgiv me©`v Zuvi bvivRxi g‡a¨ _vK‡e| 

mvZ.†Mvbvn|  †KviAvb Kvix‡g ejv n‡q‡Q, ¯’‡j I R‡j gvby‡li K…Z K‡g©i `i“b wech©q Qwo‡q c‡o‡Q| myiv Avi i“g, AvqvZ-41| Zvdmx‡i i“ûj gvAvÕbx‡Z ejv n‡q‡Q, wech©q e‡j `ywf©¶ gnvgvix AwMœKvÊ cvwb‡Z wbgw¾Z nIqvi NUbvejx cÖvPzh©| me wKQy †_‡K eiKZ D‡V hvIqv| DcKvix e¯‘i DcKvi Kg Ges ¶wZ †ekx n‡q hvIqv BZ¨vw` Avc`-wec` eySv‡bv n‡q‡Q| AvqvZ †_‡K Rvbv †Mj †h, Gme cvw_©e wec`vc‡`i KviY gvby‡li †Mvbvn I KzKg©| Zb¥‡a¨ wki&K I Kzdi mePvB‡Z gvivZ¥K| Gi ci Ab¨vb¨ †Mvbvn Av‡m| ZvB †Kvb †Kvb Av‡jg e‡jb, †h e¨vw³ †Kvb †Mvbvn K‡i †m mviv we‡k¦i gvbyl PZz®ú` Rš‘ I cï-c¶x‡`i cÖwZ AwePvi K‡i| KviY Zvi †Mvbv‡ni Kvi‡Y Abve„wó I Ab¨ †hme wec`vc` `ywbqv‡Z Av‡m Zv‡Z mecÖvYxB ¶wZMÖ¯’ nq| ZvB wKqvgv‡Zi w`b Giv mevB †MvbvnMvi e¨w³i we‡iv‡× Awf‡hvM Ki‡e| (bvDhywej­vwn wgb hvwjK)  

AvU.bvg‡R ˆkw_j¨ cÖ`k©b Kiv GKwU nv`x‡m ewY©Z Av‡Q †h e¨w³ bvgv‡R ˆkw_j¨ cÖ`k©b K‡i Zvi wR‡›`Mxi eiKZ †K‡o †bqv nq|  

bq. cvcvK‡g© evav bv †`qv| bex Kvixg mvj­vj­vû AvjvBwn Iqv mvj­vg Bikv` K‡ib, hw` †Kvb e¨w³ cvc Kv‡h© wjß nq Ges RvwZi †jv‡Ki kw³ _vKv m‡Z¡I Zv‡K evav cÖ`vb bv K‡i Z‡e g„Zz¨i c~‡e© `ywbqv‡ZB Zv‡`i Dci Avj­vni Avhve AeZxY© n‡e|(bvDhywej­vwn wgb hvwjK) Avey `vD`, Be‡b gvRvn, mvnxn Be‡b wneŸvb, Avmevnvbx, ZviMxe| A_©‰bwZK `„wó‡Kvb †_‡K w·ki `kK (1936 L„.) wQj g›`vi eQi| †mB eQi eo eo e¨emvqx c‡_ e‡m wM‡qwQj| nvRvi nvRvi e¨vsK †`Dwjqv †NvlYv Kiv n‡qwQj| e¨vcK g›`vq cÖwZwU gvbyl cÖfvweZ n‡qwQj| †mB eQi GK iweevi K‡qKRb †jvK wbDBq‡K©i gv‡e©j K‡jwR‡qU Pv‡P© Dcmbvi R‡b¨ m‡g‡eZ n‡jb| Zviv j¶¨ Ki‡jb †e`x‡Z GKRb bZzb cv`ªx e‡m Av‡Qb| †mB cv`ªxi bvg wQj bigvb wfb‡m›U cj| Zvi K_v ejvi fw½ wQj AZ¨vš— AvKl©bxq| wZwb kÖ“Zv‡`i m‡¤^vab K‡i ej‡jb, f`ª gwnjv I f`ª g‡nv`qMY! eZ©gvb `y‡h©v‡Mi KviY n‡”Q, ag© †_‡K Avgv‡`i `y‡i m‡i hvIqv| 1954 mv‡j ÔwiWvm© WvB‡R÷Õ (Digest)Gi gvP© msL¨vq cÖKvwkZ GKwU cÖwZ‡e`‡b ejv n‡q‡Q †KvwU †KvwU gvbyl Avj­vni cÖwZ cwic~Y© AvZ¥mgc©‡bi gva¨‡g wec` †_‡K gyw³ jvf Ki‡Z cv‡i| cwi‡k‡l ej‡Z PvB, Avj­vn cvK Avgv‡`i mevB‡K eZ©gvb Avw_©K AebwZ I Lv‡`¨i Afve nB‡Z cwiÎvY Ges c~Y© Cgvb I †bK Avgvj Kivi ZvIdxK¡ `vb Ki“b| Avgxb| 

cZ_¨ mnvqKd*

Zvdmx‡i i“ûj gvAvÕbx| - gvngy` Avj~mx Avj evM`v`x ivn.|*eyLvix kixd| Avey Avwãj­vn gynv¤§v` Be‡b BmgvCj Avj eyLvix ivn.|*dvZvIqv‡q kvgx| Be‡b Avwe`xb Avk kvgx ivn.|*gymwjg kixd| gymwjg Bebyj nv¾vR Avj KzkvBix ivn.|*Zvdmx‡i gvAvwidzj KziAvb| gydwZ kdx ivn. I evsjv gvIjvbv gywnDÏxb Lvb|*wgkKvZ kixd| *mvnxn Be‡b wneŸvb| *Be‡b gvRvn|*Rv‡g wZiwghx| gynv¤§v` Be‡b Cmv|*ZviMxe| gybwhix|*dvZûj Kv`xi| Avj­vgv Bebyj ûgvg|*dvZûj Kvixg wd wmqvmvwZb bvwewq¨j Avgxb| Avj­vgv gynv¤§v` gykvwn` evqgcyix,KvbvBNvUx ivn.*LyrevZzj AvnKvg| nvKxgyj D¤§vZ gvIjvbv Avkivd Avjx _vbfx ivn.*dvRvB‡j Avgvj| kvBLyj nv`xm gvIjvbv hvKvwiqv ivn.*Bmjvgx A_© e¨e¯’v| Avj­vgv wndRyi ivngvb wmnvifx|*Bmjvgx A_©bxwZi mdjZv I AvaywbK A_©bxwZi e¨_©Zv| gydvmwm‡i KyiAvb Avj­vgv b~i“j Bmjvg Iwjcyix*A_©bxwZ| gynv¤§v` gvmyg Avjx I gynv¤§v` b~i“j Avjg|* The Daily Star.*‰`wbK hyMvš—i|*‰`wbK mgKvj|*‰`wbK wm‡j‡Ui WvK|*wewfbœ B›Uvi‡bU m~Î I Avš—R©vwZK evZ©v ms¯’v mg~n|*History of islam*BZ¨vw`|

 

 

নববর্ষ ২০২২
নতুন বছরের সংকল্প

 

মানুষের জীবনে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। বলা যেতে পারে, সময়ই জীবন। বিখ্যাত তাবেয়ী হাসান বসরী রাহ. বলেছেন- ‘হে আদমের বেটা! তুমি তো কিছু দিবসের সমষ্টি। একটি দিন গত হওয়া মানে তোমার কিছু অংশ চলে যাওয়া।’ এভাবে এক দিন এক দিন করে আমাদের জীবনের দিনগুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের কর্তব্য, এই আমোঘ বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া।

দিন-রাতের বিবর্তন আমাদেরকে এই বাস্তবতা সম্পর্কে সতর্ক করে এবং আমাদেরকে কর্মমুখর হওয়ার পয়গাম শোনায়। যারা দিন-রাতের গমনাগমনের এই নীরব বাণী শ্রবণ করে সময়কে কাজে লাগাতে পারেন পরিণামে তারাই সাফল্য অর্জন করেন। কুরআন মাজীদের বিভিন্ন আয়াতে বিভিন্নভাবে এ বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে।

কুরআন মাজীদ কি শুধু সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কেই সচেতন করে? না। কুরআন শুধু সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কেই সচেতন করে না, তা ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কেও স্পষ্ট পথনির্দেশ দান করে। যে নির্দেশনা অনুসরণ করে মানুষ নাজাত ও মুক্তির পরম গন্তব্যে উপনীত হতে পারে।

হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَايِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا.

অর্থাৎ প্রত্যেকেই প্রত্যুষে উপনীত হয়ে নিজ সত্তাকে বিক্রি করে। হয়তো আল্লাহর কাছে বিক্রি করে আল্লাহর বান্দা হয়ে দিনযাপন করে। এই ব্যক্তি নিজেকে মুক্ত করে। অথবা নফস ও শয়তানের কাছে বিক্রি করে তাদের বান্দা হয়ে দিনযাপন করে। এই ব্যক্তি নিজেকে ধ্বংস করে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২২৩

মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে- সে কি আল্লাহর বান্দা হবে, না নফস ও শয়তানের বান্দা হবে।

আল্লাহর বান্দা হওয়ার অর্থ, আল্লাহ তাআলার বিধিবিধান অনুসারে জীবন-যাপন করা। সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে সকাল- চব্বিশ ঘণ্টা যে নিজেকে আল্লাহ তাআলার অনুগত রাখে, তাঁর বিধান মত চলে সে-ই সত্যিকারের আল্লাহর বান্দা। আল্লাহর কাছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ ও শান্তি। পক্ষান্তরে জীবনের দিবস-রজনীগুলোতে যে আল্লাহর আনুগত্য বর্জন করে প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, সে নফস ও শয়তানের বান্দা। নফস-শয়তান তাকে অশান্তি-অকল্যাণের পথে নিয়ে যাবে।

কারো মনে হতে পারে, যারা দ্বীন মোতাবেক চলে তাদের জীবনটা আবদ্ধ জীবন। নানা ধরনের বিধি-নিষেধের বেড়াজালে তারা আবদ্ধ। পক্ষান্তরে বেদ্বীনী জীবন হচ্ছে মুক্ত-স্বাধীন জীবন। সেখানে এতসব বিধি-নিষেধের বালাই নেই। কিন্তু এই চিন্তাটা গোড়া থেকেই ভুল। প্রথমত এই কারণে যে, যারা বেদ্বীনী জীবন যাপন করে তারা বাস্তবে মুক্ত-স্বাধীন নয়, বাস্তবে তারা নফস ও শয়তানের দাস। নফস-শয়তান তাদেরকে অনাচার-উচ্ছৃঙ্খলার আদেশ করে। আর তারা সে আদেশ পালন করে নিজেকে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করে। তাদের কর্তব্য ছিল এ  আদেশ অমান্য করা। কিন্তু তারা তা না করে নফস ও শয়তানের ক্ষতিকর বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। এই বশ্যতা স্বীকার করার পর কীভাবে তারা নিজেদের মুক্ত-স্বাধীন মনে করতে পারে?

দ্বিতীয়ত যারা দ্বীনের বিধি-নিষেধ মেনে চলে, নিঃসন্দেহে তারাও মান্যতা ও আনুগত্য অবলম্বন করে, কিন্তু সে আনুগত্য আল্লাহর, যিনি তাদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক। এ আনুগত্য বান্দার নিজের জন্যই কল্যাণকর। এ হচ্ছে শৃঙ্খলা। আল্লাহ তাআলার বিধান পালনের মাধ্যমে মানুষের জীবন সংযত ও সুশৃঙ্খল হয়। ফলে তার দুনিয়ার জীবনও সুন্দর হয়, আখেরাতের জীবনও সুন্দর হয়। এই এক জায়গায় যে নিজেকে নত করে অন্য সকল জায়গার নতজানুতা থেকে সে মুক্তি পেয়ে যায়। কবি সত্য বলেছেন-

یہ ایک سجدہ جسے تو گراں سمجھتا ہے

ہزار سجدے سے دیتا ہے آدمی کو نجات

যে একটি সিজদা তোমার কাছে অতি কঠিন, সেটিই তোমাকে মুক্তি দেয় হাজার সিজদা থেকে ।

মানুষ যখন আল্লাহ তাআলার আনুগত্যকে জীবন ও কর্মের মানদ- হিসেবে গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয় তখন পরিষ্কার ক্ষতিকর বিষয়গুলোও সে চোখ বন্ধ করে গ্রহণ করতে থাকে। মুসলিম জাতির এ অবক্ষয় খুবই দুঃখজনক। কেননা তাদের কাছে তো স্বচ্ছ পবিত্র নীতি-আদর্শ বিদ্যমান আছে। প্রবৃত্তির দাসত্বের ন্যক্কারজনক সব উদাহরণ মুসলিম-জাহানের দেশে দেশে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, আমাদের দেশে সম্প্রতি নানা যুক্তিতে মাদকের বৈধতা দেয়ার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। অথচ মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে কার না জানা আছে? মদ বিয়ার ইত্যাদিতে ৫ ভাগের নিচে এলকোহল থাকলে এগুলো বৈধ ঘোষণা করা উচিত বলে কেউ কেউ মত প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। কেউ কেউ ইউরোপের কোনো কোনো দেশের উদাহরণ টানছেন যে, ওখানে গাঁজা বৈধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউই গোড়া থেকে চিন্তা করছে না। আমাদের দেশেও যে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ শুধু ধর্মীয় চেতনা ও ধর্মপালনের কারণে মাদকের ভয়াবহ ক্ষতি থেকে বেঁচে আছেন তা কেউ আমলেই নিচ্ছেন না। এই অবস্থানকে প্রবৃত্তির অনুগামিতা ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে?

আমরা মনে করি, মাদকসহ সব ধরনের ক্ষতিকর বিষয় থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের গোড়া থেকে ভাবতে হবে। বিশ্বাস ও কর্ম সব ক্ষেত্রে ইসলামী অনুশাসনের মান্যতাকে জীবনের মানদ- হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। নতুন বছরে এই হোক আমাদের সংকল্প।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

 

 

সহজে ভেঙ্গে পড়বেন না

১- যখন রক্ত সম্পর্কীয় কেউ আপনার সাথে
প্রতারণা করবে ভেঙ্গে পড়বেন না। মনে
রাখবেন, হযরত ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) আপন ভাইদের দ্বারা
প্রতারিত হয়েছিলেন।

২- যখন পিতামাতা আপনার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবেন,
ভেঙ্গে পড়বেন না। মনে রাখবেন, হযরত
ইব্রাহীম (আলাইহিস সালাম) নিজ পিতার দ্বারাই আগুনে নিক্ষিপ্ত
হয়েছিলেন।

৩- যখন ঘোর বিপদে পতিত হয়ে বের হয়ে
আসার আর কোন উপয়ান্তর খুঁজে না পান, আশার
শেষ আলোটুকুও দেখতে না পান, ভেঙ্গে
পড়বেন না। মনে রাখবেন, হযরত ইউনুস (আলাইহিস সালাম )
মাছের পেটের অন্ধকার প্রকোষ্ট থেকেও
উদ্ধার হয়েছিলেন।

৪- যখন আপনার বিরুদ্ধে অপবাদ আরোপ করা হবে
আর গুজবে দুনিয়া ছড়িয়ে যাবে, ভেঙ্গে
পড়বেন না, এসবে কান দিবেন না। মনে রাখবেন,
হযরত আয়শা সিদ্দিকা (রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা) এর বিরুদ্ধেও অপবাদ
আরোপ করা হয়েছিল।

৫- যখন আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন, ব্যাথায়
কাঁতরাতে থাকবেন, ভেঙ্গে পড়বেন না। মনে
রাখবেন, হযরত আইয়ুব (আলাইহিস সালাম) আপনার চেয়েও
হাজারগুন বেশী অসুস্থ ছিলেন।

৬- যখন আপনি নির্জন/একাকীত্বে ভোগেন,
ভেঙ্গে পড়বেন না। স্মরন করুন, হযরত আদম
(আলাইহিস সালাম) কে, যাকে প্রথমে একাকী সঙ্গীবিহীন
সৃষ্টি করা হয়েছিল।

৭- যখন কোন যুক্তি দিয়েই আপনি কোন একটি
অবস্থার পেছনের কারণ খুঁজে পাবেন না, তখন
কোন প্রশ্ন ব্যতীতই স্মরণ করুন হযরত নুহ (আলাইহিস সালাম)
এর কথা। যিনি অসময়ে কিস্তি/নৌকা তৈরি করেছিলেন।

৮- যখন আপনি পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব,
সর্বোপরি সারা দুনিয়ার দৃষ্টিতে কৌতুকের পাত্রে
পরিণত হবেন, ভেঙ্গে পড়বেন না। স্মরণ করুন,
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর কথা।যিনি তাঁর আপনজনের হাসি-
তামাশার পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন।

আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রেরিত সকল পয়গম্বরগণকেই
পরীক্ষায় ফেলেছিলেন এবং তাঁদেরকে উদ্ধার
করেছিলেন। এজন্য যে, যাতে করে দ্বীন
পালনের ক্ষেত্রে পরবর্তী উন্মতেরা ধৈর্য্য
ধারন করতে পারে, কষ্টসহিষ্ণু হতে পারে। " নিশ্চয়
আল্লাহ ধৈর্য ধারনকারীদের সাথেই আছেন। "
[সুরা আনফালঃ ৪৬].